দুই সন্তান প্রতিবন্ধী হুইল চেয়ারের জন্য বাবা-মার আকুতি
জাহাঙ্গীর আলম, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) ||
২০২৩-০২-২৩ ০৬:৩৭:০২
একই পরিবারে মানসিক,শারিরিক ও বাক প্রতিবন্ধী সন্তান আদিয়া হোমেরা মরিয়ম (১২) ও সাবিক হাসান (০৫) কে নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে গরীব-অসহায় বাবা-মা। দুই সন্তানেই জন্ম থেকেই মানসিক,শারিরিক ও বাক প্রতিবন্ধী হওয়ায় চরম দুর্দিন পাড় করছেন ওই পরিবারটি। দুই প্রতিবন্ধী সন্তানের দুই হাতের কুনই ও দুই পায়ের আঁকা-বাঁকাসহ চিকন হওয়ায় পঙ্গুত্ব জীবন বরণ করছে দুই শিশু। ফলে ২৪ ঘন্টায় বিছানায় শুয়ে থাকতে হয় তাদের। চোখের সামনে দুই সন্তানের এই করুণ পরিনিতি দেখে অসহায় মা প্রায় সময় বাগরুদ্ধ হয়ে পড়েন। অভাবের কারণে দুই সন্তানের মূখে ভাল কিছু খাবার তুলে দিতে না পাড়ার কষ্টটাও নাড়া দেয় পরিবারটিকেও। ফলে গরীব বাবা-মার এই দুই সন্তানের জন্য চরম দুচিন্তায় পাড় করছেন বছরের পর বছর। যেন দেখার কেউ নেই। প্রতিবন্ধী দুই শিশুর বাড়ী কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের পশ্চিম বালাতাড়ি গ্রামের রড-মিস্ত্রী আমিনুল ইসলাম ও তার স্ত্রী গৃহিনী শাহিদা বেগম দম্পতির সন্তান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দরিদ্র রট-মিস্ত্রী আমিনুল ইসলামের নেই কোন ফসলি জমি। বাবার দেওয়া মাত্র ৮ শতক জমিতে বসত ভিটা। আমিনুল জীবন-জীবিকার তাগিদে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় রড-মিস্ত্রীর কাজ-কাম করে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা আয় করেন। সেই আয় দিয়ে ঢাকায় নিজের জীবন চলার পাশাপাশি বাড়ীতে স্ত্রীসহ দুই প্রতিবন্ধী শিশুটিকে নিয়ে চরম হিমশিম খাচ্ছেন পরিবারটি। চার বছর আগে বড় মেয়ে মরিয়মের জন্য চেয়ারম্যান-মেম্বারদের দ্বাড়ে দ্বাড়ে ঘুরে প্রতিবন্ধী ভাতা করেন। ছোট ছেলেরও দুই মাস আগে একই ভাবে ঘুরে প্রতিবন্ধী ভাতা করেছেন। সংসারে আয় বলে দুই সন্তানের ভাতার টাকা ও রড-মিস্ত্রীর সামান্য আয়ে অতি কষ্টে ৪ সদস্যের সংসার খেয়ে না খেয়ে চললেও প্রতিবন্ধী দুই সন্তানের জন্য হুইল চেয়ার কিনে দেয়ার সামথর্য নেই তাদের। রড-মিস্ত্রী আমিনুল ইসলামের কাজ জুটলে দু-বেলা খাবার জোটে,আর কাজ না জুটলে থাকতে অনাহারেও। এভাবেই অতিকষ্টে দুই প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে কোন রকমেই জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছেন পরিবারটি। অসহায় এই পিতার পক্ষে দুই সন্তানের জন্য হুইল চেয়ার কিনে দেওয়ার স্বামথর্য না থাকায় সরকারসহ সমাজের বিত্তবানদের কাছে সন্তানের ছেলের জন্য হুইল চেয়ারের আকুতি জানিয়েছেন।
বাবা আমিনুল ইসলাম ও মা সাহিদা বেগম জানান, আমাদের অভাবী সংসার। জন্মের পর থেকে দুই সন্তানের চিকিৎসার পিছনে আমরা অনেক টাকা-পয়সা খরচ করেছি। কিন্তু সুস্থ করতে পারেনি বাহে ! গরীব সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা। সেখানে দুই সন্তানের ভরণপোষন ব্যয়ভার মিটিয়ে ছেলে-মেয়ের জন্য হুইল চেয়ার কেনা আমাদের কাছে স্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই না। কেউ যদি আমাদের এই অসহায় দুই সন্তানের জন্য হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করতো তাহলে সন্তানের কষ্টটা দুর হতো বাহে। এই দুই দম্পতি আরও বলেন, সরকারসহ সমাজের কোন বিত্তবান ও দানশীল ব্যক্তির কাছে হুইল চেয়ারের আকুতি জানিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুমন দাস জানান, সমাজ সেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে মানসিক, শারিরিক ও বাক- প্রতিবন্ধী দুই শিশুর জন্য হুইল চেয়ার দেওয়ার আশ্বাস দেন ইউএনও।
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Published by the Editor from House-45,
Road-3, Section-12, Pallabi, Mirpur
Dhaka-1216, Bangladesh
Call: +01713180024 & 0167 538 3357