দিনাজপুরে ভুয়া নিয়োগ প্রদানকারী প্রতারক চক্রের হোতা গ্রেফতার

সুলতান মাহমুদ, দিনাজপুর || ২০২৩-০১-২৩ ০৯:২১:২৯

image

দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভুয়া কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষর স্ক্যানিং করে ভুয়া নিয়োগ  বিজ্ঞপ্তি প্রকাশকারী মূল প্রতারক আনিকা তাসনিম সরকার তৃষা (৩২)  ও তার কথিত স্বামী আব্দুল মান্নান  ওরফে মান্না (৩৫)  কে গ্রেপ্তার করেছে  পুলিশ।

আজ সোমবার বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে দিনাজপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই দুই প্রতারককে গ্রেফতারের সংবাদটি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার  শাহ ইফতেখার আহমেদ। 

মুুল  নারী প্রতারক আনিকা তাসনিম সরকার তৃষা দিনাজপুর জেলার  ফুলবাড়ী উপজেলার  কাটা পাড়া গ্রামের  ফুলবাড়ী পৌর সভার সাবেক মেয়র শাহজাহান আলী সরকার পুতুর  মেয়ে।

অপর প্রতারক আব্দুল মান্নান ওরফে মান্না নাটোর জেলার  সদরের জালালাবাদ গ্রামের চাঁদ মিয়ার ছেলে। এই প্রতারক চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কারাগারের কারা রক্ষী হিসাবে কর্মরত রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার জানান, গত শনিবার তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে এই নারী প্রতারক আনিকা তাসনিম সরকার তৃষা  ও তার কথিত স্বামী আব্দুল মান্নান ওরফে মান্না কে  দিনাজপুর পৌরসভার দক্ষিণ বালুবাড়ী এক ভাড়া বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার করার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এই নারী প্রতারক জানান, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন লোককে সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এই নারী প্রতারক তার প্রতারনা কাজ সহজ করার জন্য আর আগেই আরোও দুটি টি বিয়ে করেছিল। এই নারী প্রতারককে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানায় একটি প্রতারণার মামলা পর গ্রেফতার করার পর কিছুদিন জেল খেটে বাহিরে বের হয়ে আবারও তার এ প্রতারণার কাজ শুরু করেছে।

এই  প্রতারক নারী তার কথিত স্বামী গ্রেফতারের সময়  তার সাথে থাকা ভুয়া নিয়োগ পত্রের মাধ্যমে যোগদানকৃত তিনটি খাম ।  প্রজ্ঞাপন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর এর নিয়োগপ্রাপ্ত ও নিয়োগ পত্র আদেশের দুটি কপি। নিয়োগ পত্রের প্রজ্ঞাপন তিন পাতা নিকাহনামা সহ বিভিন্ন কাগজ ৬ পাতা। বিভিন্ন জনের ভোটার আইডি কার্ড তিনটি । জাল জালিয়াতির কাজে ব্যবহৃত ছয়টি সিম কার্ড।  পাসপোর্ট দুটি। মোবাইল  ফোন ৬টি। নগদ ৪০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। এফজেড মোটর সাইকেল  যাহার রেজিষ্ট্রেশন নম্বার  নাটোর ল -১১-৫১১৩ জব্দ করা হয়েছে।
  
তিনি আরোও জানান এই নারী প্রতারক দিনাজপুর পঞ্চগড় ঠাকুরগাঁ ও ঢাকা, নাটোর, ঝিনাইদহ বিভিন্ন স্থানের বেকার যুবক যুবতীদের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ইতিমধ্যে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে  নিয়েছে। এই নারী প্রতারক গ্রেফতারের সংবাদ জড়িয়ে পরায় কয়েকজন দিনাজপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে চাকরি প্রার্থী যারা টাকা দিয়েছে তারা জড়ে হয়েছে।  এই প্রতারক নারীর দৃষ্টন্ত মুলক শাস্তি দাবি করেন বিভিন্ন প্রতারনার শিকার প্রাথীরা।

দিনাজপুর জেলা কার্যালয়ে এই নারী প্রতারক দ্বারা প্রতারিত হওয়া শারমিন সুলতানা তনু বলেন, তার বাড়ী দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর উপজেলায়  তাকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে এবং ভুয়া নিয়োগ পত্র প্রদান করে প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই নারী প্রতারক ।

একইভাবে প্রতারিত হওয়া রাকিবুল ইসলাম বলেন, চাকরি দেওয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে তিন লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই নারী প্রতারক। এই প্রতারক  নারী  টাক নিয়ে তার নিজস্ব একাউন্টে  টাকা রাখে না। তার অন্য পরিবারের  মানয়ের একাউন্টে টাকা পয়সা পাঠিয়ে দেয় । তার সাথে আরো বড় বড় কয়েকজন প্রতারক জড়িত।  

পঞ্চগড়ের  হাসিনা বানু বলেন তার মেয়ে কে চাকরি দেওয়ার কথা বলে তার কাছ থেকেও ৭ লাখ টাকা গ্রহণ করেছে এই নারী প্রতারক। বিভিন্নভাবেই খুঁজে পাওয়া না যাওয়ার অবশেষে পুলিশের সহযোগিতায় এই নারী প্রতারককে গ্রেফতার করা সংবাদ শুনেও তিনি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়েছি। 

উল্লেখ্য যে গত ১৫ ই জানুয়ারী ২০২৩ তারিখে জাতীয় ‘ দৈনিক মানবকন্ঠ‘  ও স্থানীয় দৈনিক খবর একদিন  পত্রিকায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, দিনাজপুর এর ৫টি পদে ৫০ জন কর্মচারী নিয়োগের একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। মুলত: অজ্ঞাত প্রতারক চক্র জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, দিনাজপুর এবং জেলা প্রশাসক, দিনাজপুর এর নাম ও স্ক্যানকৃত স্বাক্ষর ব্যবহার করে কর্মচারী নিয়োগ সংক্রান্ত মিথ্যা ও বানোয়াট নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য জেলা প্রতিনিধির নিকট প্রেরন করেন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া- বানোয়াট এবং প্রতারক চক্র তাদের অসত উদ্দেশ্য হাসিল করার নিমিত্ত প্রত্রিকায় প্রকাশের জন্য প্রেরন করে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের দৃষ্টিগোচর হলে দৈনিক মানবকন্ঠ এর দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধিকে জানান যে, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য কোন পত্র বা বিজ্ঞপ্তি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রেরন করা হয় নাই। দৈনিক মানকন্ঠের প্রতিনিধি বাদি হয়ে কোতয়ালী থানায় একটি প্রতারনা মামলা দায়ের করেন। 

Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Published by the Editor from House-45,
Road-3, Section-12, Pallabi, Mirpur
Dhaka-1216, Bangladesh
Call: +01713180024 & 0167 538 3357

News & Commercial Office :
Phone: 096 9612 7234 & 096 1175 5298
e-mail: financialpostbd@gmail.com
HAC & Marketing (Advertisement)
Call: 01616 521 297
e-mail: tdfpad@gmail.com