এমপি-মন্ত্রী আমরা বানাইসি, পুলিশ-যুবলীগ নেতার ফোনালাপ ভাইরাল
আসাদুজ্জামান সাজু, লালমনিরহাট ||
২০২২-১০-০৩ ০১:৫৮:০২
লালমনিরহাট সদর থানায় কর্মরত পুলিশের উপ-পরিদর্শক মোস্তাফিজার রহমান। জেলার আদিতমারী উপজেলার পলাশী ইউনিয়ন যুবলীগের নুরবক্ত মিয়া নামে এক নেতাকে ফোনে হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। ওই ফোনালাপ ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে । ওই যুবলীগ নেতার অভিযোগ পুলিশের এ কর্মকর্তা তাকে বলেছেন, তারাই নাকি (পুলিশ) এমপি-মন্ত্রী বানিয়েছেন। এবার হইয়েন। কিছু দিন যাক বুঝতে পাবেন দলের কথা বললে পিটুনিও খাবেন ।
শুধু তাই নয়, এসআই মোস্তাফিজার রহমানের তদন্তে থাকা একটি মামলার ভুক্তভোগীর কাছে ঘুষ চেয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন ওই ভুক্তভোগী। তবে এসব অভিযোগ পুরো অস্বীকার করেছেন পুলিশ কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান। তিনি বলেছেন, বিএনপি’র সময় কনস্টবল পদে ছিলাম, পদন্নোতি পেয়েছি। আওয়ামী লীগ বড় দল তাদের নিয়ে বাজে মন্তব্যও আমার সাজে না।
জানা গেছে, গত জুনে জেলার আদিতমারী উপজেলার পলাশী ইউনিয়ন যুবলীগের নুরবক্ত মিয়া নামে এক নেতার এক আত্মীয়ে মেয়ে (কিশোরী) অপহৃত হয়। এ ঘটনায় লালমনিরহাট সদর থানায় গত ২৬ জুন একটি মামলা দায়ের করে কিশোরীর পরিবার। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান থানার এসআই মোস্তাফিজার রহমান।
তদন্ত চলাকালীন অপহৃত কিশোরী ও অপহরণকারী যুবকের সন্ধান মেলে রাজধানীর খিলগাঁও থানা এলাকায়। সংশ্লিষ্ট থানায় জানিয়ে ওই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন মোস্তাফিজার রহমান । উদ্ধার করেন কিশোরীকে, গ্রেফতার হন অপহরণকারী।
পরে কোনো নারী পুলিশ সদস্য বা পরিবারের কাউকে না নিয়েই কিশোরী ও অপহরণকারীকে নিয়ে লালমনিরহাটে রওনা দেন এসআই মোস্তাফিজার। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন সঙ্গীয় এক পুরুষ কনস্টবল।
ঘটনাটি এখানেই শেষ হয়নি। ঢাকা আসা-যাওয়ার জন্য কিশোরীর পরিবারের কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন লালমনিরহাট সদর থানার এসআই। টাকা না দিলে তাকে যশোর সংশোধনাগারে পাঠানোর হুমকিও দেন তিনি। উপায় না পেয়ে ভুক্তভোগীর বাবা-মা তাকে ১০ হাজার টাকা দেন। এরপর কিশোরীকে আদালতে তোলেন মোস্তাফিজার রহমান।
জানা গেছে, এসআই মোস্তাফিজারের দাবীকৃত টাকা তাকে পাঠান পলাশী ইউনিয়ন যুবলীগের নুরবক্ত মিয়া নামে ওই নেতা। তিনি কিশোরীর সম্পর্কে মামা। পরে নুরবক্ত এসআই মোস্তাফিজারকে বিষয়টি নিয়ে ফোন দেন। দুজনের কথোপকথনের একপর্যায়ে দলীয় পরিচয় দেন নুরবক্ত। এ সময় এসআই তাকে বলেন, যে দল করেন তার এমপি-মন্ত্রী আমরা বানাইসি। এবার হইয়েন, কত বড় নেতা হইছেন এবার হইয়েন। দলের কথা বললে পিটুনি খাবেন।
কিশোরীর অভিযোগ, এসআই মোস্তাফিজারের মুখের ভাষাও জঘন্য। কিশোরী বলেছে, এসআই তাকে অপ্রকাশযোগ্য গালাগাল দিয়েছেন।
যুবলীগ নেতা নুরবক্ত বলেন, টাকার জন্য আমার ভাগ্নিকে আমার সঙ্গে দেখা করতে দেননি এসআই মোস্তাফিজার। বরং তাকে যশোর পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি। নিজের দলীয় পরিচয় দিলে তিনি আমাকে পিটুনির ভয় দেখান। আওয়ামী লীগ নিয়েও তিনি বাজে মন্তব্য করেছেন।
সব অভিযোগ অস্বীকার করে লালমনিরহাট সদর থানার এসআই মোস্তাফিজার রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ বড় দল, তাদের নিয়ে বাজে মন্তব্য করা আমার সাজে না। ওই কল রেকর্ডের কণ্ঠ আমার নয়।
লালমনিরহাট সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মোজাম্মেল হক বলেন, মামলা সংক্রান্ত কাজে কর্মস্থলের বাইরে গেলে তার খরচ সরকারিভাবে খরচ করা হয়। বাদি পক্ষ থেকে কোনো কিছু নেওয়ার সুযোগ নেই। কারও কাছ থেকে জোর করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ পেয়ে এসআই’র বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Published by the Editor from House-45,
Road-3, Section-12, Pallabi, Mirpur
Dhaka-1216, Bangladesh
Call: +01713180024 & 0167 538 3357