আমতলীর চাওড়া খাল দখলের মহা উৎসব
মাহতাবুর রহমান, আমতলী, বরগুনা ||
২০২২-০৯-২৬ ০৮:২৮:২৪
বরগুনার আমতলী উপজেলার চাওড়া ইউনিয়নের স্থানীয় প্রভাবশালীরা তালুকদার হাট এলাকায় চাওড়া খাল অবৈধ ভাবে দখল করে দুই পাড়ে আধাপাকা ভবন নির্মান করে সরকারী খাল দখল করেছে। খাল দখল করে দুই পাড়ে আধা পাকা ঘর নির্মান করায় ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়েছে খালের গতি পথ ও আবাসিক ভবন থেকে ময়লা আবর্জনা ফেলা এবং মল মূত্র ত্যাগ করায় দূষিত হচ্ছে খালের পানি। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে ১৯৯০ সালে চাওড়া খালের তালুকদার হাট এলাকায় সেতু নির্মানের পর ঐ এলাকায় ব্যবসায়িক কেন্দ্র গড়ে ওঠায় খালের দুই পাড় দখলের হিরিক পড়ে যায়। আধা কিলোমিটার এলাকা জুড়ে খালের পূর্বপাড় সিদ্দিক মৃধা, মতি মেম্বার, আলতাফ খান, কবির মৃধা, আহসান মৃধা, বশার ডিলার, লিটন মাস্টার, লোকমান ডাক্তার এবং খালের পশ্চিমপাড় স্থানীয় জাকির মৃধা, হারুন মৃধা, দেলোয়ার মৃধা, অনিল মিস্ত্রী, সেন্টু ব্যাপরী আশ্রাফ আলী মল্লিক, হাসান মৃধা, জালাল মৃধা, আবুল গাজী, মোতাহার মাষ্টার, সোহেল প্যাদা, খলিল খা, মতিন খা, শাহীন হাওলাদার, শানু হাওলাদার, নিজাম উদ্দিন চৌকিদার , মো: সেলিম সহ দুই শতাধিক প্রভাবশালীরা রাতারাতি খাল দখল করে নেয়। দখল কৃত এসকল জায়গায় গড়ে তোলা হয় আধা পাকা আবাসিক ভবন এবং ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান। খাল দখল করে তোলা এসকল ঘর ভাড়া দিয়ে প্রভাবশালীরা প্রতি মাসে মোটা অংকের টাকা আয় করছেন। ভবন তোলার জন্য অনেকেই খালের মধ্যে মাটি এবং ইটের টুকরো ফেলে খালের অর্ধেকটাই ভরাট করেছেন। খালের দুই পাড় থেকে মাটি এবং ইট দিয়ে ভরাট করায় প্রবহমান খালের গতি পথ প্রায় বন্ধের উপক্রম হয়েছে। প্রবাহমান স্রোত বাধাঁগ্রস্ত হওয়ায় পলি পড়ে অনেকটাই এখন ভরাট হয়ে গেছে এতে নৌচলাচল বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে এ খালে নৌ চলাচল সম্পর্ন বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। খাল দখল করে ঘড়বাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মান করায় এসকল দোকান এবং আবাসিক ভবন তেকে প্রতিনিয়ত খালে ময়লা আবর্জনা এবং খোলা পায়খানার মাধ্যমে খালে মলমূত্র ত্যাগ করায় পানি দূষন বাড়ছে। পানি দূষনের ফলে গ্রামের লোকজন এখন এ খালের পানি কোন কাজে ব্যবহার করতে পারছেন না। অনেকেই এখন দূর দুরান্ত থেকে পানি এনে ব্যবহার করছেন। স্থানীয় বাসিন্দা আলতাফ হোসেন জানান, যে ভাবে খাল দখল শুরু হয়েছে তাতে দু’এক বছরের মধ্যে এ খালের অস্তিত্ব থাকবে না। ফলে নৌ চলাচলে বিপর্যয় নেমে আসবে। প্রশাসন এব্যাপারে কোনো ভূমিকা রাখছে না।
বুধবার সকালে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, দুই পারে দুই শতাধিক আধাপাকা ঘড় তোলায় খাল সংকুচিত হয়ে আসছে। এবং অনেক ঘড়ের সাথে রিংস্লাব বসিয়ে পায়খানা বসানোর ফলে এখন অহরহ খালের পানি দুষিত হচ্ছে। ফলে খালের পানি এখন আর কেই ব্যবহার করতে পারছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, এভাবে খাল দখল করায় অদূর ভবিষ্যতে খালটি আর থাকবে না এবং নৌ চলাচলও ব্যাহত হবে। তারা আরো জানান, খাল দখল কারীরা অনেক প্রভাবশালী। তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলতে চায় না।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত) সাদিক তানভীর ফিনান্সিয়াল পোস্টকে বলেন, খাল দখল করা সম্পূর্ন অবৈধ। যারা অবৈধ ভাবে খাল দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং আধা পাকা ঘড় বাড়ি নির্মান করেছেন তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবং দখলদারদের হাত থেকে খাল উদ্ধার করা হবে।
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Published by the Editor from House-45,
Road-3, Section-12, Pallabi, Mirpur
Dhaka-1216, Bangladesh
Call: +01713180024 & 0167 538 3357