যে কারনে সারা দেশে ছড়িয়ে আছে ধরমন্ডলের নাম

মজিবুর রহমান খান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া || ২০২২-০৯-০৯ ০০:৫৩:৩১

image
ধরমন্ডল। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের এই গ্রামটি নারী অপরাধীদের আখড়া। দেশের কোথাও নারী ছিনতাইকারী ধরা পড়লেই উঠে আসে এ গ্রামের নাম। গ্রামের গৃহবধূ বড় শহরের ছিনতাইকারী। গত কয়েক বছরে দেশের বিভিন্ন স্থানে ওই গ্রামের অন্তত একশো নারী ছিনতাইকারী ধরা পড়ে। জেলা সদর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে এই গ্রাম। ৫ াট গ্রাম নিয়ে ধরমন্ডল ইউনিয়ন। এরমধ্যে ধরমন্ডল গ্রামে প্রায় ২০ হাজার লোকের বসবাস। এটি বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম গ্রাম। বিভিন্নভাবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গ্রামটির প্রায় এক হাজার নারী ছিনতাইকে পেশা হিসেবে নিয়েছে। একটি চক্র তাদেরকে লাখ লাখ টাকায় চুক্তি করে ছিনতাইয়ের কাজে লাগায়। ছিনতাইয়ের প্রধান টার্গেট নারীদের শরীরে থাকা স্বর্ণালংকার। বিশেষ করে স্বর্নের চেইন। চুক্তি অনুযায়ি চক্রের হাতে এনে তারা এসব স্বর্ণালংকার তুলে দেয়। এ কাজে নানা কৌশলও কাজে লাগায় নারী ছিনতাইকারীরা। বিশেষ করে সঙ্গে শিশু রাখাটা হচ্ছে অন্যতম কৌশল। সরজমিন খোজ খবরে জানা যায়,সারা দেশেই বিশেষ করে বড় বড় শহরে অপরাধ করে বেড়ায় এই গ্রামের নারী ছিনতাইকারীরা। ২০১৯ সালের ৯ মে ফেনীতে ছিনতাইয়ের সময় ধরা পড়েন মুর্তুজ আলীর ছেলে রহিম মিয়ার স্ত্রী আকলিমা। আকলিমার বাড়ি হবিগঞ্জের মনতলা গ্রামে। বাবার বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে বেশিরভাগ সময়ই এলাকার বাইরে থেকে অপরাধ করে বেড়ান। এরআগে আগে হবিগঞ্জের ঘাটিয়া এলাকায় ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার গ্রামের আজকির মিয়ার স্ত্রী রাবেয়া। ২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে ধরা পড়েন ধরমন্ডল গ্রামের কোকন মিয়ার স্ত্রী সোলেমা খাতুন (২৫), নাসির মিয়ার স্ত্রী লাভলী আক্তার (২২), মনির মিয়ার স্ত্রী রিনা খাতুন (২০), এহিয়ার স্ত্রী রিফুজা খাতুন (২০) ও কামরুল ইসলামের স্ত্রী শামসুন্নাহার বেগম (২৬)। রাজপাড়া থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে রাজশাহী মহিলা কলেজের ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রায়হানা আক্তার জাহান উল্লেখ করেছেন, তিনি প্রতিদিনের মতো নিজের কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য সকাল সাড়ে ৯টার সময় নগরীর হড়গ্রাম বাজারের দিগন্তপ্রসারি ক্লাবের মোড়ে আসেন। সেখান থেকে তিনি একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় উঠতে দেখে অপেক্ষমান আরো পাঁচজন নারী যাত্রীও ওই রিকশায় ওঠেন। তখন তিনি এত যাত্রীর সঙ্গে যেতে আপত্তি করেন। এ অবস্থায় ওই নারীরা কেউ তাকে আন্টি কেউ তাকে দাদী সম্বোধন করে বলতে থাকেন,‘চলেন এইটুকু রাস্তা একসঙ্গেই যাই। ’ তারপর তিনি সম্মত হন। রিকশাটি ক্লাবের মোড় থেকে প্রায় ১০০ গজ দক্ষিণে উকিলবারের মেইন গেটের সামনে যেতেই এই পাঁচ নারীর মধ্যে তাঁর পাশে বসা একজন নারী তার পিঠের দিকে হাত দেন। তিনি প্রথমে মনে করেছেন চাপাচাপি করে বসার কারণে এমনটি হচ্ছে। পরপর তিনবার হাত দেওয়ার পরে তিনি বুঝতে পারেন এই নারীটি তার গলার চেইন খুলে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ছিনতাইকারী বলে চিৎকার করতে থাকেন। রিকশা থামাতে বলেন। এ সময় তিনি মেয়েটির হাতের ওপর ছাতা দিয়ে আঘাত করতে থাকেন। এরই মধ্যে পাঁচ নারী তাকে চারিদিক থেকে ঘিরে ধরে বলেন, কাকে কী বলছেন, তাঁরা এই ধরনের মানুষ না। চিৎকার করার সময় তাদের একজন তাঁর গলা চেপে ধরেন। একজন চাকু বের করেন। রিকশা থামার সঙ্গে সঙ্গে তারা নেমে পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু সেখানে টহলরত পুলিশ ওই নারীদেরকে আটক করেন। ধরমন্ডল গ্রামের এলিম মিয়ার স্ত্রী তাহমিনা আক্তার ও নিজাম উদ্দিনের স্ত্রী দিলারা বেগম মৌলভীবাজারের পাখিয়ালা উদ্ভব ঠাকুরের মন্দিরে কীর্তন চলাকালীন হিন্দু সেজে স্বর্ণের চেইন ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। ২০১৬ সালের ১৯ নভেম্বরের এ ঘটনায় থানায় নিয়মিত মামলা হয়। ২০১৭ সালের ১ আগস্ট মামলার রায়ে দুজনকেই তিন মাসের কারাদণ্ড ও এক হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ের আরো এক মাসের জেল দেন আদালত। নোয়াখালীর কম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০১৯ সালের ২৭ জানুয়ারি রোগীর চেইন চুরি করতে গিয়ে ধরমন্ডল গ্রামের সুলতানা খাতুন (৩০), চম্পা খাতুন (১৪) সহ তিন নারী ধরা পড়েন। ছিনতাইয়ের শিকার হালিমা খাতুন পুলিশকে জানান, সরকারি হাসপাতালে ডাক্তার দেখানোর জন্য তিনি টিকিট কাটার জন্য লাইনে দাঁড়ান। দীর্ঘ সারির লাইনে সামনে ও পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা অপরিচিত চার নারী তাঁর সঙ্গে ধাক্কাধাক্কির ভান করে। এক পর্যায়ে একজন একজন গলার চেইন নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন তাদেরকে আটক করে পুলিশ তুলে দেয়। ২০১৭ সালের ২৬ এপ্রিল শরীয়তপুরের সদর উপজেলার কাশিপুরে জুনায়েদ শিকদারের স্ত্রী পারভীন, বাচন মিয়ার স্ত্রী স্বপ্না, খালেক মিয়ার স্ত্রী আশা, জমির আলীর স্ত্রী রিয়া আক্তার, রমিজ আলীর স্ত্রী জেসমিন আক্তার, একই বছরের ৩১ ডিসেম্বর হবিগঞ্জের মাধবপুর বাসস্ট্যান্ডে সালেক মিয়ার স্ত্রী পারভীন বেগম, শফিক মিয়ার স্ত্রী স্বপ্না বেগম, সোলাইমান হোসেনের স্ত্রী বানেছা বেগম, মাসুদ মিয়ার স্ত্রী মৌসুমী বেগম, খলিল মিয়ার স্ত্রী চান বানু, সিদ্দিক মিয়ার স্ত্রী জোৎস্না বেগম, মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী লিল সার, মজনু মিয়ার স্ত্রী হামিদা বেগম, ২০১৯ সালের ২৭ জানুয়ারি নোয়াখালীর কম্পানিগঞ্জে সুলতানা খাতুন, চম্পা খাতুন, একই বছরের ২১ জানুয়ারি ফেনীর ফুলগাজীতে মহোৎসবে তাসলিমা আক্তার, ১৮ মার্চ চট্টগ্রামের রহমতগঞ্জে মাঈনুদ্দিনের স্ত্রী রুবিনা, হানিফের স্ত্রী খায়রুন, জুয়েলের স্ত্রী হাফিজা, ২০১৮ সালের ১ জুলাই চট্টগ্রাম ও সীতাকুন্ডে রাহেলা, আফিয়া, ফুলতারা, সাহার বানু, সুলতানা, নাজমা, মরিয়ম, ১৬ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের কতোয়ালীতে সবুর মিয়ার স্ত্রী নাজমা বেগম, ২ জানুয়ারি আশুলিয়ায় ফুলচান, জুলেহা, হানু, তাসলিমা, আফুজা, শারমীন, শামছুন্নাহার, ২০১৯ সালে হবিগঞ্জের ঘাটিয়া এলাকায় আজকির মিয়ার স্ত্রী রাবিয়া, কামাল মিয়ার স্ত্রী দিলারা, জিতু মিয়ার মেয়ে লাইজু, ওই বছরের ২০ জানুয়ারি সাভারে খায়রুন, কমলা, মিতু, ফরিদা, বানেছা, জামেলা, মারুফা, ১৯ মে ফেনীর কসকা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আজিজুর রহমানের স্ত্রী পারভীন, রহিম মিয়ার স্ত্রী আকলিমা, আব্দুল মালেকের স্ত্রী শারমীন, এমরান হোসেনের স্ত্রী মমতাজ, নোমানের স্ত্রী রোজিনা, ২২

Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Published by the Editor from House-45,
Road-3, Section-12, Pallabi, Mirpur
Dhaka-1216, Bangladesh
Call: +01713180024 & 0167 538 3357

News & Commercial Office :
Phone: 096 9612 7234 & 096 1175 5298
e-mail: financialpostbd@gmail.com
HAC & Marketing (Advertisement)
Call: 01616 521 297
e-mail: tdfpad@gmail.com