নির্ধারিত স্কুল ড্রেস না পরায় শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীকে বকাঝকা, অতঃপর বিষ পানে ছাত্রীর আত্মাহত্যা
হাজী জাহিদ, নরসিংদী ||
২০২২-০৯-০২ ১৪:০৩:৩৭
বিদ্যালয়ের নির্ধারিত ড্রেস পরে না আসায় শ্রেণিকক্ষে আইনুন তাজরি প্রভা নামে এক শিক্ষার্থীকে বকাঝকা করেন শিক্ষক। এ অপমান সইতে না পেরে ইঁদুর মারার বিষ পান করে থানায় গিয়ে হাজির হয় ছাত্রী। পুলিশের কাছে অভিযোগ দিয়েই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) নরসিংদীর শিবপুর উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে।
মৃত শিক্ষার্থী উপজেলার বাঘাব ইউনিয়নের জয়মঙ্গল গ্রামের প্রবাসী লুৎফর রহমান ভূঁইয়া ভুট্টোর মেয়ে। সে শিবপুর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষিকা নারগিস সুলতানা ওরফে কনিকাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
পুলিশ ও শিক্ষকরা জানায়, বিদ্যালয়ের নির্ধারিত পোশাক পরে আসার নিয়ম থাকলেও প্রভা সাদা রঙের টাইস পড়ে শ্রেণিকক্ষে আসে। এতে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিক নারগিস সুলতানা (কনিকা) তাকে অপমান করে বাড়ি চলে যেতে বলেন এবং নির্ধারিত পোশাক পরে আসতে বলেন। সহপাঠীদের সামনে বকাঝকা করায় অপমান বোধ করে ওই ছাত্রী বিদ্যালয় থেকে বের হয়ে শিবপুর বাজারের এক দোকান থেকে ইঁদুর মারার বিষ কিনে তা পান করে।
এর পর শিবপুর মডেল থানায় গিয়ে শিক্ষিকার বিরুদ্ধে মৌখিক অভিযোগ করে। সেখানেই প্রভা অসুস্থ হয়ে পড়লে পুলিশ ফোন করে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নূর উদ্দিন মো. আলমগীরকে জানান। তিনি থানায় এসে প্রভাকে বিকাল ৪টার দিকে শিবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালে রেফার করেন চিকিৎসক। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক নারগিস সুলতানা বলেন, প্রভা প্রায় সময়ই বিদ্যালয়ে নিয়মবহির্ভূত চলাচল করত। এসব নিয়ে আগেও কয়েকবার তার অভিভাবকদের জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার সে টাইস পড়ে বিদ্যালয়ে আসে। দেখতে খারাপ লাগছে বলে তাকে বাড়িতে গিয়ে পোশাক পরিবর্তন করে আসতে বলি। তাকে কোনো মারধর করা হয়নি।
এদিকে শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন মিয়া জানান, ছাত্রীটি থানায় এসে যখন ডিউটি অফিসারকে ঘটনা বলছিল, জানতে পেরে আমি এগিয়ে এসে তার বক্তব্য লিখে রেখেছি। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে আটকের চেষ্টা চলছে। ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিনিয়া জিন্নাত জানান, ঘটনার পর রাতেই জরুরি সভা করে অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ঘটনার তদন্ত করে আগামী দুই কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জামা দিতে বলা হয়েছে।
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Published by the Editor from House-45,
Road-3, Section-12, Pallabi, Mirpur
Dhaka-1216, Bangladesh
Call: +01713180024 & 0167 538 3357