লাতিন আমেরিকার যেসব দেশে প্রাণঘাতি করোনার তাণ্ডব চলমান রয়েছেন মেক্সিকো তার অন্যতম। প্রতিদিনের রেকর্ড আক্রান্ত ও প্রাণহানিতে ভয়াবহ সংকটের মুখে দেশটি। গত একদিনেও সেখানে ছয় হাজারের বেশি নাগরিক নতুন করে করোনার শিকার হয়েছেন। এতে করে আক্রান্ত বেড়ে ২ লাখ ৬৮ হাজারে পৌঁছেছে। প্রাণহানি বেড়ে ৩২ হাজার ছাড়িয়েছে।

দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বিশ্বখ্যাত জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডমিটারের তথ্য বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৬ হাজার ২৫৮ জনের দেহে করোনার সংক্রমণ মিলেছে। এতে করে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮ জনে দাঁড়িয়েছে। প্রাণ গেছে আরও ৮৯৫ জনের। এ নিয়ে লাতিন আমেরিকার দেশটিতে প্রাণহানি ৩২ হাজার ১৪ জনে ঠেকেছে।

লাতিন আমেরিকার দেশটিতে আগের তুলনায় বেড়েছে মৃতের হার। দুই সপ্তাহ আগে যেখানে ছিল ১৪ শতাংশ সেখানে তা বেড়ে হয়েছে ১৬ শতাংশ। অপরদিকে কমেছে সুস্থতার হার। একই সময়ে ৮৬ থেকে ৮৪ শতাংশে নেমেছে বেঁচে ফেরা। যার সংখ্যা ১ লাখ ৬৩ হাজার ৬৪৬ জন।

দেশটিতে প্রথম করোনা শনাক্ত হয় চলতি বছরের ১৮ মার্চ। প্রথমদিকে তেমনটা সংক্রমণ না ছড়ালেও ক্রমান্বয়ে তা ভয়াবহ রূপ নেয়। ফলে সাড়ে তিন মাসে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ৩২ হাজার পেরিয়েছে।

রয়েটার্স জানায়,‘পরীক্ষা কম হওয়ায় দেশটিতে গড়ে ৫ হাজারের বেশি মানুষ সংক্রমিত হচ্ছেন, যা গত দু’সপ্তাহ ধরে অব্যাহত রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে তথ্য গোপনেরও।’

মেক্সিকোর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জোসে লুইস আলোমিয়া বলেন, ‘দেশে যেভাবে সংক্রমণ হচ্ছে, তা শিগগিরই বাড়তে পারে। আরও পরীক্ষাকেন্দ্র চালুর চিন্তা করা হচ্ছে।’

বিশ্বে আক্রান্তের তালিকায় মেক্সিকো এখন ৯ নম্বরে। আর প্রাণহানিতে দিক থেকে পাঁচে। তবে, লাতিন আমেরিকার মধ্যে দ্বিতীয়। সবার ওপরে ব্রাজিল। সময় যত গড়াচ্ছে পরিস্থিতি আরও সংকটের দিকে যাচ্ছে দেশটিতে।

বিশ্বে মৃত্যুর দিক দিয়ে প্রথম চারটি দেশ হলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, যুক্তরাজ্য, ইতালি। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যু ১ লাখ প্রায় ৩৪ হাজার। আর ব্রাজিলে ৬৭ হাজার ছুঁই ছুঁই।

বিশ্বে বাংলাদেশ সময় বুধবার সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বিশ্বখ্যাত জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যানুযায়ী, সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে ১ কোটি ১৯ লাখ ৪৯ হাজার ২৮০ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের তালিকায় যুক্ত হয়েছে বিশ্বের ২ লাখ ৭ হাজার ৭৫২ জন মানুষ। একইসময়ে প্রাণ গেছে আরও ৫ হাজার ৫১৭ জনের। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা ৫ লাখ ৪৬ হাজার ৬০১ জনে ঠেকেছে। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন সাড়ে ৬৮ লাখ ভুক্তভোগী।