রূপগঞ্জে ৫ দিন ধরে তীব্র গ্যাস সংকট, ভোগান্তিতে গ্রাহকরা
সাইফুল ইসলাম, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) ||
২০২২-০৬-২১ ০৯:১২:১৪
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে তিতাস গ্যাস এন্ড ট্রান্সমিশন কোম্পানীর গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এতে করে আবাসিক গ্রাহকদের ভোগান্তির প্রাশাপাশি ও শিল্প কারখানা গুলোর উদপাদন ব্যহত হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে আবাসিক গ্রাহকরা কেউ মাটির তৈরী চুলা ও গ্যাস সিলিন্নডারে রান্না করতে হচ্ছে। অনেকে আবার রেস্তোরা থেকে খাবার কিনে আনছেন। গত ৫ দিন সপ্তাহ ধরেই উপজেলায় তীব্র গ্যাস সংকট চলছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
জানা গেছে, রূপগঞ্জ উপজেলার তিতাস গ্যাসের প্রায় ৭ হাজার বৈধ আবাসিক গ্যাস সংযোগ রয়েছে। এছাড়া এ উপজেলায় এনজেড টেক্সটাইল, অনুপম হোসিয়ারি, রবিনটেক্সসহ ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় এক হাজার শিল্প কারখানা রয়েছে। যার মাঝে প্রায় শতাধিক কারখানায় পন্য উৎপাদনে গ্যাসের ব্যবহার হয়ে থাকে। গত শুক্রবার ১৬ জুন থেকে উপজেলার রূপসী, বরপা, তারাব, ভুলতা, গোলাকান্দাইল, কাঞ্চন, শান্তিনগর, কাজীপাড়া, দক্ষিণ রূপসী, মৈকুলী, মুড়াপাড়া, আমলাবোসহ পুরো উপজেলার তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। অধিকাংশ এলাকায় কখনো গ্যাসের চুলায় আগুন জ্বলছে, কখনো জ্বলছে না। আবার কখনো জ্বলছে নিভু নিভু করে। এতে গৃহিণীদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে। এদিকে গ্যাস না থাকায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৫ শতাধিক শিল্প কারখানার উৎপাদন কাজ ব্যহত হচ্ছে। গ্যাস অনেক শিল্প কারখানার মালিকরা শ্রমিকদের আগেই ছুটি দিয়ে দিচ্ছেন। এতে কারখানা মালিকদের কোটি কোটি টাকা লোকসানের সম্মূখীন হতে হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত ৫ দিন ধরে গ্যাস না থাকায় কেউ টিন কেটে চুলা বানিয়ে তাতে লাকরি দিয়ে, কেউবা আবার মাটির চুলায় কষ্ট করে রান্না-বান্নার কাজ শেষ করছেন। কিন্তু মাটির চুলায় রান্না করে অনেকেরই আবার কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে দুই থেকে আড়াই ঘন্টা পরে। কিছু এলাকায় ভোর সকালে নিভু-নিভু গ্যাস থাকলেও তাতে হাড়িও গরম হয়না বলে জানান গৃহিণীরা। অনেকেরই খাওয়া দাওয়া করতে হচ্ছে হোটেলে। এছাড়া উপজেলার রেস্তোরা গুলোতেও ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে।
উপজেলার শিল্প কারখানা মালিকরা জানান, গত ৫ দিন ধরে উপজেলায় গ্যাসের তীব্র সংকট। এতে করে আমরা ভাল করে উৎপাদন করতে পারছি না। উৎপাদন না শ্রমিকদের বেতন দিবো কোথা থেকে। শুনেছি কোথায় যেন গ্যাস লিকেজের কাজ চলছে। তিতাস কর্তৃপক্ষকে গ্যাস লিকেজ মেরামতের দাবি জানাচ্ছি। দ্রুত গ্যাস সংকট না কাটলে আমরা কোটি কোটি টাকা ক্ষতির সম্মূখীন হবো।
কথা হয় ভুলতা এলাকার এক গৃহিনী রিনা বেগমের সঙ্গে তিনি বলেন, গ্যাস না থাকায় বাধ্য হয়ে লতাপাতা ও লাকরি এনে মাটির চুলায় রান্না করছি। গত ৫ দিন ধরে মাটির চুলায় রান্না করতে হচ্ছে। গ্যাস মাঝেমাঝে একটু আধটুকু আসলেও একটু পরেই আবার চলে যায়। কবে যে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবো জানি না। গ্যাস সংকট নিরসনে কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
চায়ের দোকানি দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমি বাড়িতে ছোট একটি চায়ের দোকান দিয়ে সংসার চালাচ্ছি। সারাদিন গ্যাসের চাপ এতই কম থাকে যে চায়ের কেটলির পানিও গরম হতে ঘণ্টাখানেক সময় লেগে যায়। তাই বাধ্য হয়ে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করছি। গ্যাস না থাকায় গ্যাস বিলের পাশাপাশি অতিরিক্ত খরচ বহণ করতে হচ্ছে। গত ৫ দিন ধরে এ সমস্যা পোহাচ্ছি।
কথা হয় রেস্তরোয়ায় খাবার কিনতে আসা সাইদুর রহমানের সঙ্গে তিনি বলেন, গ্যাস না থাকায় বাড়িতে রান্না হয়নি। তাই রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার কিনে নিয়ে যেতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে তিতাস গ্যাস সোনারগাঁও আঞ্চলিক শাখার ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মিজবাহ-উর রহমান মুঠোফোনে বলেন, গত শুক্রবার আদমজী ইপিজেডের পলমল ফ্যাশনের পাইলিং করার সময় গ্যাস পাইপ ফেটে যাওয়ার ঘটনায় মেরামত কাজ চলছে। সেখানে কাজ করার সময় ৪০ ফিট নিচে ২৪০ টন ওজনের পাইলিং রিগ ডেবে যায়। যার জন্য মেরামত কাজে সময় বেশি লাগছে। আশা করি দুই দিনের মধ্যে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Published by the Editor from House-45,
Road-3, Section-12, Pallabi, Mirpur
Dhaka-1216, Bangladesh
Call: +01713180024 & 0167 538 3357