৩ সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমির এডহক কমিটির কাছে দায়িত্ব দিচ্ছেন না সাবেক মহাপরিচালক
শাহাদাত হোসেন শান্ত, চাঁদপুর ||
২০২২-০৬-১৯ ০৭:২৩:১৭
চাঁদপুর জেলা প্রশাসক ও চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমির সভাপতি কর্তৃক আট বছর আগে মেয়াদোত্তীর্ণ পুরাতন কমিটি ভেঙে এডহক কমিটি গঠন করার তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক এডহক কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করছেন না। অথচ ২৪ মে 'র পর থেকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যেই দায়িত্ব হস্তান্তর করার কথা।
ইতিমধ্যে তাকে এডহক কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরে সদ্য বিদায়ী জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ এবং নতুন জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের নির্দেশনায় দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার জন্য ২ বার লিখিত নোটিশ দেওয়া হয়। এছাড়াও সাহিত্য একাডেমির অফিস সহকারী মোঃ মাসুদের মাধ্যমে মৌখিকভাবে একাধিকবার অনতিবিলম্বে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে তাকে বলা হয়। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য, চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক কাজী শাহাদাত প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সাহিত্য একাডেমির সকল স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি, একাডেমির সকল হিসাব, অর্থ নিজের কাছে কুক্ষিগত করে রেখেছেন। কী কারনে বা কোন্ ক্ষমতাবলে খোদ জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশও মানছেন না। উপরন্তু তিনি জেলা প্রশাসন সম্পর্কে উদ্যত্যপূর্ণ আচরণ দেখিয়েই যাচ্ছেন, যা সম্পুর্ন শৃংখলা পরিপন্থী এবং সরকার প্রশাসনের বৈধ আদেশ নিষেধের উপর চরম অবমাননাকর। এটি এখন জেলার কবি, লেখক, সাহিত্যিক, সাহিত্যানুরাগী ও সচেতন মহলের মুখে মুখে বিরাজমান।
প্রশাসন ও দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ মে সাহিত্য একাডেমির এক জরুরী সভায় কার্যনির্বাহী কমিটির মহাপরিচালকসহ কমিটির অন্যান্যদের উপস্থিতিতে, এর সভাপতি জেলা প্রশাসক সাংগঠনিক ভাবে দায়িত্বে অবহেলা, অব্যবস্থাপনা এবং ব্যর্থতার দায়ে চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমির মেয়াদোত্তীর্ণ নির্বাহী পরিষদ বিলুপ্ত ঘোষনা করেন। একই সাথে অন্তর্বর্তীকালীন কার্য পরিচালনার জন্য ১১ সদস্য বিশিষ্ট নতুন এডহক কমিটি গঠন করা হয়। চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমির কার্যনির্বাহী কমিটির সভায়
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক ও সাহিত্য একাডেমির সভাপতি অঞ্জনা খান মজলিশ গঠনতন্ত্রের ২৪ এর (ছ) উপ-ধারার ক্ষমতাবলে পূর্বের নির্বাহী পরিষদ বিলুপ্ত ঘোষনা করে অন্তর্বর্তীকালীন কার্য পরিচালনার জন্য গঠনতন্ত্রের ২৪ এর (জ) উপ-ধারা অনুযায়ী ১১ সদস্য বিশিষ্ট অন্তর্বর্তীকালীণ কমিটিটি (এডহক কমিটি) গঠন করেন।
পরবর্তীতে এডহক কমিটির কাছে ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর ও সকল হিসাব বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য গত ২৫ মে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও এডহক কমিটির আহবায়ক মোছাম্মৎ রাশেদা আক্তার স্বাক্ষরিত পত্র সাবেক মহাপরিচালক কাজী শাহাদাতকে প্রদান করেন।
৭ কর্ম দিবসের শেষ দিন সাবেক মহাপরিচালক কাজী শাহাদাত দায়িত্ব হস্তান্তর ও সকল হিসাব বুঝিয়ে না দিয়ে গত ২ জুন অগঠনতান্ত্রিক উপায়ে গঠিত এডহক কমিটি দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিতে অনিহা প্রকাশ করে বৈধ উপায়ে এডহক কমিটি গঠনের জন্য বর্তমান জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের কাছে একটি আবেদন করেন। যাতে তিনি সম্পুর্ন অগঠনতান্ত্রিক এবং অশোভনীয় এবং মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করেন।
জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বিদ্যমান গঠনতন্ত্রে অনুযায়ী উক্ত আবেদনের যৌক্তিকতা না থাকায় আবেদনটি নাকচ করে দেন। এরপর গত ৬ জুন এডহক কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর ও সকল হিসাব বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের নির্দেশক্রমে সাধারণ শাখার সহকারী কমিশনার এ.আর.এম. জাহিদ হাসান স্বাক্ষরিত পত্র সাবেক মহাপরিচালক কাজী শাহাদাতকে প্রদান করেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে, সাবেক এই মহাপরিচালকের কাছে ঐ চিঠি অফিসিয়ালভাবে পাঠালেও তিনি অস্বীকার করেন তিনি পাননি। এছাড়াও তিনি অফিস সহকারির কাছে শুনার পর যে দায়িত্ব হস্তান্তর বিষয়ে নড়েচড়ে বসেন, নানা হিসাব নিকাশসহ কাগজপত্র নিয়ে বসেন, তাও অফিস সহকারির কাছে জানতে পেরেছেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। এরপরও চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যলয় থেকে দ্বিতীয়বারের পত্রটি আবারও অফিস সহকারীকে দিয়ে পাঠানো হয় বৃহস্পতিবার। কিন্তু এখন পর্যন্ত চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক কাজী শাহাদাত প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে হিসাব না দিয়ে সাহিত্য একাডেমির সকল স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি, একাডেমির সকল হিসাব, অর্থ নিজের কাছে কুক্ষিগত করে রেখেছেন।
কী কারনে বা কোন্ ক্ষমতাবলে খোদ জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশও মানছেন না। এটি এখন জেলার কবি, লেখক, সাহিত্যিক, সাহিত্যানুরাগী ও সচেতন মহলের মুখে মুখে বিরাজ করছে। এছাড়া সাহিত্য একাডেমির বিগত দশ বছরের আর্থিক হিসাব গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সংরক্ষণ না করা, নিয়মিত সাধারন সভা না করা ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এসব কারনেই তিনি মূলত দায়িত্ব দিতে টালবাহানা করছেন - এমন কথাও উঠছে। প্রসঙ্গতঃ জনাব কাজী শাহাদাত জেলা টিআইবি, এবং সনাক এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন। একসময় এ ২ টা থেকেও তাকে সরে দাঁড়াতে হয়। যদি তার দাবি ছিলো - তিনি স্বেচ্ছায় গেছেন। চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমির দায়িত্ব হস্তান্তরের বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( শিক্ষা ও আইসিটি) সংশ্লিষ্ট ও সাংবাদিকদের জানান, দায়িত্ব হস্তান্তর উনাকে করার জন্যই আমরা আবারও চিঠিটা পাঠালাম। তিনি বলেন, আইন বা নিয়মের বাইরে গিয়ে কোন কিছু করার সুযোগ নেই। যা হয়েছে, সেটি নিয়ম নীতি মেনেই হয়েছে।
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Published by the Editor from House-45,
Road-3, Section-12, Pallabi, Mirpur
Dhaka-1216, Bangladesh
Call: +01713180024 & 0167 538 3357