অপরিকল্পিত, অপ্রস্তুত, ও বৈষম্যমূলক পন্থায় প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ও চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে অনলাইন শিক্ষাকার্যক্রম চালুর চেষ্টা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য আত্মঘাতী হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক (ইউটিএন)। আজ বৃহস্পতিবার অনলাইনে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানায় সংগঠনটি।
এছাড়া এধরনের পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৈষম্য বাড়াবে বলে মনে করছেন শিক্ষকেরা।
শিক্ষার্থীদের মহামারীকালিন বিপর্যস্ত অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় তাদের মাসে ৩০০০ টাকা বৃত্তির আহ্বান জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। সেইসঙ্গে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি কমপক্ষে অর্ধেক হ্রাস করার কথাও বলা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিনা লুৎফা ও বখতিয়ার আহমেদ শিক্ষক নেটওর্য়াকের লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
এতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো শিক্ষা-কার্যক্রমের একটি অলঙ্ঘনীয় ও মৌলিক পূর্বশর্ত হচ্ছে সংশ্লিষ্ট সব শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণের সমান সুযোগ থাকতে হবে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ন্যূনতম কোন বৈষম্য তৈরি করে এমন শিক্ষা-কার্যক্রম পরিচালনার নৈতিক অধিকার কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেরই নেই।
শিক্ষক নেটওয়ার্ক মনে করে, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে অনলাইনে ক্লাস শুরু করলে বৈষম্য অবশ্যম্ভাবী আকারে দেখা দেবে।
‘এছাড়াও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রযুক্তিগত অবকাঠামো ও সক্ষমতা এখনও অনলাইন কার্যক্রম চালানোর ন্যূনতম পর্যায়ে পৌঁছাতে পারেনি।’
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক জানায়, ইউজিসি এবং শিক্ষামন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার অপেক্ষায় থাকা এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে কোনোরকম প্রস্তুতি ছাড়াই কেবল প্রশাসনিক আদেশে ‘অনলাইন-ক্লাস’ চালু করার চেষ্টা আমাদের উদ্বিগ্ন করেছে।
‘কেবল অস্পষ্ট দাপ্তরিক আদেশ দিয়ে ‘অনলাইন-ক্লাস’ চালুর প্রচেষ্টা নিয়ে আমরা সন্দিহান যে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের রাজনৈতিক আনুগত্য ও ফায়দা হাসিলের জন্য তাড়াহুড়ো করে লোকদেখানো ‘অনলাইন ক্লাস’ শুরু হবে এবং শিক্ষার্থীদের মহামারী বিপর্যস্ত জীবনে আরো মারাত্মক সমস্যার জন্ম দেবে।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষকেরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন গত ২৩ মার্চ এক চিঠিতে সব প্রাইভেট ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে অনলাইন ক্লাসে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইন ক্লাসে গেলেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অবকাঠামোর অসুবিধা জানায়। ইউজিসির জরিপে জানা যায় যে, ৮৫ শতাংশের কাছে ইন্টারনেট ব্যবহার করার মতো ডিভাইস আছে। অর্থাৎ, বিদ্যমান অবকাঠামোয় শিক্ষার্থীদের ১৫ শতাংশের হাতে অনলাইন কার্যক্রমে যুক্ত হবার মতো প্রযুক্তি নেই, যা শিক্ষার্থীদের সমান সুযোগ পাওয়ার শর্ত ভঙ্গ করে।
২০২০ শিক্ষাবর্ষ পুনরুদ্ধারে বেশ কয়েকটি সুপারিশ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। তারা জানায়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কমপক্ষে ৫০ ভাগ শিক্ষার্থীকে তথ্য-প্রযুক্তি সক্ষমতা অর্জনের জন্য এককালীন ২০ হাজার টাকার বৃত্তির ব্যবস্থা করতে হবে। অর্থনৈতিক বিচারে দুঃসাধ্য হলে তা দীর্ঘমেয়াদী সুদহীন ঋণ হিসেবে দিতে হবে।
সব শিক্ষার্থীর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের জন্য বিনামূল্যে ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে হবে এবং দেশের সব অঞ্চলে প্রয়োজনীয় গতির ইন্টারনেট প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে।
শুরুতে শুধু স্নাতোকোত্তর ক্লাসের শিক্ষার্থীদের নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে অনলাইন শিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করা যেতে পারে বলে মনে করছে সংগঠনটি।
এছাড়াও শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বিদ্যাজাগতিক স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা বিধানে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ২০১৮ বাতিল করতে হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। এই আইন বহাল রেখে অনলাইন শিক্ষাকার্যক্রম চালুর কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নোত্তর পর্বে আলোচনায় অংশ নেন আনু মুহাম্মদ, কামরুল হাসান মামুন, কাজী এস ফরিদ, শর্মী হোসেন, অভ্যিনু কিবরিয়া ইসলাম, সিত্তুল মুনা হাসান, খাদিজা মিতু, ও আরিফুজ্জামান রাজীব।
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Published by the Editor from House-45,
Road-3, Section-12, Pallabi, Mirpur
Dhaka-1216, Bangladesh
Call: +01713180024 & 0167 538 3357
News & Commercial Office :
Phone: 096 9612 7234 & 096 1175 5298
e-mail: financialpostbd@gmail.com
HAC & Marketing (Advertisement)
Call: 01616 521 297
e-mail: tdfpad@gmail.com