কর্মচারীর ৫৮ মাসের বেতন তুলে নিজের পকেট ভরেছেন রাজশাহীর আড়ানী পৌরসভার মেয়র মুক্তার আলী। এই টাকার পরিমাণ প্রায় ৯ লাখ টাকা। গত ৯ জুলাই গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত মেয়র এ টাকা তুলেছেন। দুদকের তদন্তে বিষয়টি ধরা পড়েছে। দুদক সূত্রে জানা গেছে, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আল-আমিনের নেতৃত্বে একটি দল গত বুধবার দিনভর আড়ানী পৌরসভা কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে। এ সময় বের হয়ে এসেছে দুই কর্মচারীর বেতন তুলে নেওয়ার বিষয়টি। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকে দুজন কর্মচারীর নামে প্রতি মাসে চেক দিয়ে বেতন তোলা হয়েছে। কিন্তু ওই দুই কর্মচারীর কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি পৌরসভায়।
পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র কার্তিক চন্দ্র হালদার বলেন, দুদক তাদের কাছ থেকে কিছু নথি নিয়েছেন। আরও কিছু নথি চেয়েছেন। এর জন্য তারা ৭২ ঘণ্টা সময় নিয়েছেন। তবে তারা কী দুর্নীতি পেয়েছে, তা তদন্ত শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত কাউকে বলতে নিষেধ করেছেন। আড়ানী পৌরসভার একটি সূত্র জানিয়েছে, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে ৯ হাজার টাকা বেতনে মাস্টার রোলে চতুর্থ শ্রেণির ছয় কর্মচারীর নিয়োগ হয়। তাদের মধ্যে চারজন বাস্তবে আছেন। অন্য দুজনের কোনো অস্তিত্ব নেই। গত জুলাইয়ে মেয়র গ্রেপ্তার হওয়ার আগ পর্যন্ত ওই দুজনের নামে বেতন-ভাতা হয়েছে, যা নিয়েছেন মেয়র। টাকার পরিমাণ প্রায় ৯ লাখের মতো। মেয়র গ্রেপ্তার হওয়ার পর এটি বন্ধ হয়েছে।
দুদক সূত্রে আরও জানা গেছে, ২০১১ সাল থেকে পৌরসভায় সচিব নেই। সহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার সুনির্দিষ্ট নিয়ম না থাকলেও তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পৌরসভার নিজস্ব কোনো জিপ গাড়ি নেই, এর জন্য কোনো তেলও বরাদ্দ নেই। তা-ও জিপ গাড়ির তেলের নামে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও অনেক প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে অর্থ নয়ছয় করা হয়েছে। আর এসব কাজে মুক্তার আলীর প্রধান সহযোগী ছিলেন ভারপ্রাপ্ত সচিব সাইফুল ইসলাম। তার আয়ের সঙ্গে সম্পদের সামঞ্জস্য নেই বলে দুদক টিমের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। সাইফুল ইসলাম বলেন, পদোন্নতি পেয়ে তিনি জয়পুরহাটের কালাই পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত আছেন। দুদকের তদন্তের বিষয়টি তিনি শুনেছেন।
অস্তিত্বহীন দুই কর্মচারীর ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘অস্তিত্বহীন নয়, ওই দুই কর্মচারীর বেতন মেয়র মহোদয় তুলেছেন, এটাই আমি শুনেছি।’ নিজের অনিয়মের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘সবকিছু আমার আয়কর বিবরণীতে আমি দিয়েছি। আমার কোনো অনিয়ম নেই। দুদক তদন্ত করে যদি কিছু পায়, তারা বলবে।’ এলাকার এক কলেজ শিক্ষককে মারধরের জেরে গত ৬ জুলাই মেয়র মুক্তার আলীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়। সেই রাতেই পুলিশ তার বাড়িতে অভিযান চালায়। বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় চারটি আগ্নেয়াস্ত্র, নগদ ৯৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা, ১৬ লাখ ও দেড় লাখ টাকার ২টি চেক, ৪৩টি তাজা গুলি, ৪টি ব্যবহৃত গুলির খোসা, ইয়াবা ২০টি, গাঁজা ১০ গ্রাম ও ৭ গ্রাম হেরোইন। গ্রেপ্তার করা হয় মেয়রের স্ত্রী জেসমিন খাতুন, ভাতিজা সোহান ও শান্তকে। পরে ৯ জুলাই পাবনার ঈশ্বরদী থেকে মেয়র মুক্তার আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাঁর বাড়িতে আবারও অভিযান চালিয়ে ৪ বোতল ফেনসিডিল, ১০০ গ্রাম গাঁজা, নগদ ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা এবং দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হয়। ১১ জুলাই মুক্তার আলীকে মেয়রের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। গ্রেপ্তারের পর থেকে মুক্তার আলী কারাগারে।
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Published by the Editor from House-45,
Road-3, Section-12, Pallabi, Mirpur
Dhaka-1216, Bangladesh
Call: +01713180024 & 0167 538 3357
News & Commercial Office :
Phone: 096 9612 7234 & 096 1175 5298
e-mail: [email protected]
HAC & Marketing (Advertisement)
Call: 01616 521 297
e-mail: [email protected]