সমাজে এমন কিছু মানুষ আছে যারা প্রকৃত পক্ষেই মানবতাবোধ সম্পন্ন। মানবতার ফেরিওয়ালা। তারা নিরবে নিঃশব্দে সমাজের জন্য কাজ করে যান। এরকমই একজন মানুষ কোহিনূর আক্তার প্রিয়া।
সময়-অসময় নেই, দিন আর রাত নেই । তার মানবিক দায়িত্ববোধ তাকে পরিচালনা করেছে অসহায় মানুষের টানে মমত্ববোধ থেকে। গভীর রাতেও তাকে দেখা গেছে কোন না কোন অনাহারী মানুষের পাশে দাঁড়াতে। খাদ্য সামগ্রী তুলে দিতে হাতে। এরকম অনন্য দৃষ্টান্ত অনেক আছে তার। যার সাক্ষী হয়তো দু’চারজন ছাড়া পাওয়া যাবে না। তাতে তার কিছু যায় আসেনা। যারা মানব প্রেমিক তারা স্রষ্টার সন্তুষ্টিতে সন্তুষ্ট হয়। মানুষ কি বললো না বললো সেই অপেক্ষায় থাকে না।
কম-বেশি তার সাথে একটু-আকটু ঘনিষ্টভাবে মেশার সুযোগ হয়েছে আমার। পেশাগত কারণেই অনেক কর্মকান্ডও করার সুযোগ হয়েছে এক সাথে। তিনি মানবিক ছিলেন একথা বলবো না তবে সব গুনের বাইরেও যে বিশেষ একটি গুন মানুষ হিসেবে থাকা উচিত সেটা জনাবা কোহিনূর আক্তার এর মধ্যে আছে এবং তা একটু আলাদা'ই। একজন নারীর মধ্যে এতোটা মানব প্রেম থাকতে পারে তা একেবারেই অবিশ্বাস্য অন্তত আমার কাছে।
ছোটবেলায় প্রখ্যাত লেখক ইব্রাহিম খাঁর একটি অসাধারণ ছোটগল্প পড়েছিলাম। গল্পটির নাম ‘ভাঙ্গা কুলা’। যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ এলে গল্পটির কথা মনে পড়ে। বিশেষ করে যখন দেখি কিছু নিবেদিতপ্রাণ লোক নিঃস্বার্থভাবে অন্যের সেবা করেন। গল্পটির সঙ্গে আমার আজকের গল্পের অনেকটা মিল আছে। গল্প বললে মনে হয় ভুল হবে। কারণ, আমি বাস্তব ঘটনা তুলে ধরছি। বর্তমানে ‘ভাঙ্গা কুলা’ গল্পটি পাঠ্যবইয়ে কোনো ক্লাসে পড়ানো হয় বলে আমার জানা নেই।
নিজের সামান্য আয় দিয়ে অসহায় ভবঘুরে পথশিশুদের রিতিমত পরিচর্যা করে থাকেন তিনি। বিভিন্ন জাতীয় দিবসে তৃষ্ণার্ত মানুষকে পানি পান করানো এবং কখনো ফুল দিয়ে বরণ করেন। ঈদের আগে এতিম শিশুদের পোশাক কিনে দেন, শীতার্ত মানুষের মধ্যে কম্বল বা শীতের পোশাক বিতরণ করেন। বির্ভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষকে নিরাপদ স্থানে যেতে সহযোগিতা করেন।
যেকোনো বিপদে-আপদে ঝাঁপিয়ে পড়েন সবার আগে। অনেক অসহায় মানুষের আস্থার শেষ ঠিকানা কোহিনূর। এলাকার অসহায় গরিব মানুষের ক্যানসার, ব্রেন টিউমার, প্যারালাইসিস ও দুর্ঘটনায় বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হলে তাদের জন্য নিজে ও মানুষের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে প্রয়োজনে রাজধানী ঢাকায় হাসপাতালে এসব মানুষকে নিয়ে যান। কোহিনূরের এই মহৎ কাজের জন্য দেশ-বিদেশের অনেক প্রবাসী তাঁর মাধ্যমে সহযোগিতা করে থাকেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মেড্ডার আরামবাগ এলাকার এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম কোহিনূর আক্তার প্রিয়ার। বাবা হাজী সহিদ মিয়া ও মা সুলতানা রাজিয়া'র ৬ সন্তানের মধ্যে ৪র্থ কোহিনূর আক্তার। বর্তমানে বাবা-মা দু'জন'ই প্রয়াত। বয়স ৩৭ বা ৩৮ বছর হবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর কলেজ থেকে ডিগ্রি পাস করেছেন। ভাইয়েরা নিজ নিজ জীবিকার পথ বেছে নেন আর বোনদের বিয়ে হয়ে যায়।
প্রচার বিমূখ এই মানুষটি বিগত ২০ বছর যাবত নিজ অর্থায়নে অসংখ্য অসহায় হত-দরিদ্র ও পথ শিশুদের জন্য কাজ করে আসছেন। এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের অর্থায়নে অসংখ্য অসহায়, হতদরিদ্র গরীব মানুষের চিকিৎসার জন্য দিয়েছেন নগদ অর্থ ও সামাজিক সেবা।
তিনি 'প্রাউড অব ব্রাহ্মণবাড়িয়া', 'সেবার লক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া', স্বপ্নের ব্রাহ্মণবাড়িয়া', গ্রীন ব্রাহ্মণবাড়িয়া', হৃদয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া', ব্লাড ফর ব্রাহ্মণবাড়িয়া', 'মজিদ মাষ্টার ফাউন্ডেশন, ছাড়াও বহু সামাজিক সংগঠনের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়াও তিনি নারী মুক্তি সংসদ, জেলা নাগরিক ফোরাম এর মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা।
ভবিষ্যত পরিকল্পার বিষয়ে জানতে চাইলে 'কোহিনূর আক্তার প্রিয়া' বলেন, মানুষের সেবা করা, অসহায়দের মুখে হাসি ফোটানো, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সেবা ও লেখা পড়ার ব্যবস্থা করা এবং মানুষের কল্যাণে কাজ করতে চাই। ভবিষ্যতে অসহায় বৃদ্ধাদের সেবার লক্ষে আমি আমার বাড়িতেই একটি বৃদ্ধা নিবাস করার পরিকল্পনা আছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান যদি মানুষের কল্যাণে কিছু কিছু অর্থ দান এবং মানুষকে সেবা দানে এগিয়ে আসে তাহলেই 'আলোকিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া' গড়া সম্ভব’ বলে মনে করেন কর্মগুণে আলো ছড়ানো 'কোহিনূর আক্তার প্রিয়া।
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Published by the Editor from House-45,
Road-3, Section-12, Pallabi, Mirpur
Dhaka-1216, Bangladesh
Call: +01713180024 & 0167 538 3357
News & Commercial Office :
Phone: 096 9612 7234 & 096 1175 5298
e-mail: financialpostbd@gmail.com
HAC & Marketing (Advertisement)
Call: 01616 521 297
e-mail: tdfpad@gmail.com