চাচাতো ভাইয়ের হাতে রক্তাক্ত জখম হলেন হার্ডওয়ার ব্যবসায়ী রবিউল্লা
- এ এইচ আবিল, শিবপুর, নরসিংদী
-
২০২২-১০-১৩ ০৯:৪৪:৫৩
- Print
নরসিংদীতে চাচাতো ভাইয়ের হাতে রক্তাক্ত জখম হলেন শিবপুর বাজারের হার্ডওয়ার ব্যবসায়ী রবিউল্লা । জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের বাড়ির চলাচলের রাস্তায় বাঁশের ঘেরা দিয়ে অবরুদ্ধ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার চক্রধা ইউনিয়নের চান্দেরটেক গ্রামের রবিউল্লাহর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে মারামারি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ সংঘটিত হয়। এতে উভয় পক্ষের ৬ জন আহত হয় । অতর্কিত হামলায় গুরুত আহত শিবপুর বাজারের প্রাইম ব্যাংকের সম্মুখে অবস্থিত হার্ডওয়ার ব্যবসায়ী রবিউল্লাকে গুরুতর আহতবস্থায় ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন । প্রতিপক্ষের হামলায় মাথা ফেটে যায় তার এতে মাথায় ৭ টি সেলাই লাগে ও শাবলের আঘাত প্রতিরোধ করতে গেলে ডান হাত ভেঙ্গে যায় এবং ভাই তার মা আহত হন । রবিউল্লার মা ও ভাই প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি চলে যান । গত ৭ অক্টোবর শুক্রবার সকাল ৮ দিকে রবিউল্লা ব্যবসায়ীক কাজে শিবপুর বাজারের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হবার সময় দেখেন রাতের আধাঁরে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয় চাচাতো ভাই আবুল বাশার ও সহোদরেরা পরে জিঙ্গেস করলে মুহুর্তেই ঝগড়ার দানা বাধে । প্রথমে মৌখিক ঝগড়া পরে পলকেই দেশীয় অস্ত্র দিয়ে রবিউল্লার ওপরে হামলা করে চাচাতো ভাই আবুল বাশার ও পরিবারের লোকজন এতে রবিউল্লা ও তার বৃদ্ধ মা আহত হয় । জীবন রক্ষার জন্য রবিউল্লা প্রতিরোধের চেষ্ঠা করলে চাচাতো ভাই আবুল বাশার ছোট ভাই হারিছুল ও বোন আহত হয় । বর্তমানে আবুল বাশার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে যান ।
পারিবারিক সংঘর্ষের সুত্রপাত সম্পর্কে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, রবিউল্লার দাদা মৃত কাছম আলী মৃত্যুকালে তিন ছেলে রেখে যান । তারা হলেন মৃত, ১,শাহাবউদ্দিন, ২,মৃত জাহাদ আলী ও ৩, মৃত মোক্তার আলী । রবিউল্লার দাদা মৃত্যুর সময় ৩৮ শতাংশ জমি রেখে যান । এই জমি তার তিন ছেলে ১,২,৩, ছেলেরা ১২ শতাংশ ৬৬ পয়েন্ট করে সমানভাবে ভোগ করে আসছিলেন মৃত কাছম আলীর সন্তানরা সমভাবে মিলে মিশে ভোগ করতে পারলেও সমস্যা দেখা দেয় তাদের রেখে যাওয়া উত্তরসুরী নাতিদের মধ্যে । এখন মৃত কাছম আলীর বড় ছেলে শাহাবউদ্দিনের ছেলেরা মানতে অনিহা তারা বেশি ভোগ দখল করার অপচেষ্ঠায় লিপ্ত রয়েছে । মৃত শাহাবউদ্দিনের ছেলেরা গায়ের জোরে ১২ শতাংশ ৬৬ পয়েন্ট মেনে না নিয়ে তারা একাই ১৯ শতাংশ ভোগ দখল করতেছে । এজন্য স্থানীয় শালিশি মাতুব্বরদের শরণাপন্ন হয় মৃত,জাহাদ আলীর ছেলে রবিউল্লাহ একাধিবার শালিশ দরবার হলেও শালিশের মধ্যেই ঝগড়া লেগে দেন প্রতিপক্ষরা । উপজেলার চক্রধা ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও একাধিক শালিশি দরবার করেন সর্বশেষ বেশ জাকজমকভাবে একটি শালিশে উভয় পক্ষকে রাজি করাতে সক্ষম হন স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মাতুব্বরা এবং জমির বিরোধ মিমাংশায় উপনীত হন । পরে সামাজিকভাবে হাজিরানা মজলিশে ৩০০ টাকার ষ্টেম্পে সমান ভাবে ১২ শতাংশ ৬৬ পয়েন্ট করে ভোগ দখল মেনে নিবেন মর্মে উক্ত ষ্টেম্পে স্বাক্ষর করেন এবং সীমানা নির্ধারন করে দিয়ে যান স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মাতুব্বরা। বছরে খানেকের মধ্যে মাটির ঘর ভেঙ্গে দিবেন চলাচলের রাস্তা দিবেন মর্মে আপোষ করেন উভয় পক্ষ কিন্তু কিছুদিন যেতেই আবার শুরু হয় সীমানা জটিলতা ও চলাচলের রাস্তার বন্ধের পায়তারা শুরু করেন শাহাবউদ্দিনের ছেলে আবুল বাশারের সহোদরেরা । এরই প্রেক্ষিতে গত শুক্রবার সকালে রাতের আধাঁরে রবিউল্লার বাড়ি থেকে বের হওয়ার রাস্তা বাঁশের ঘেরা দিয় বন্ধ করে দেয় এবং তিনটি আমের চারা কেটে ফেলে চাচাতো ভাই আবুল বাশার ও তার সহোদরেরা । তাদের পারিবারিক সীমানা জটিলতা নিয়ে সংঘর্ষ ও রক্তের হুলি খেলায় এলাকায় থম থমে অবস্থা বিরাজ করছে তাছাড়া আতঙ্কিত পুরো গ্রাম ।
রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও হামলার বিষয়ে প্রতিপক্ষ চাচাতো ভাই আবুল বাশারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রবিউল্লা আমাদের চলাচলের রাস্তা দেয়নি বিধায় আমরা তার চলাচলের রাস্তাও বন্ধ করে দিয়েছি তার ঘর ভেঙ্গে রাস্তা দিলে আমরাও চলাচলের রাস্তায় বাঁশের ঘেরা খুলে দিব ।
রবিউল্লাহ বলেন, আমার প্রাপ্য জমি ১২ শতাংশ ৬৬ পয়েন্ট বুঝিয়ে দিলে আমি গোসল খানা ভেঙ্গে তাদের রাস্তা প্রশস্ত করে দিব এতে আমার কোন রকম আপত্তি নেই । বর্তমানে আমার দখলে ১০ শতাংশ ৬৪ পয়েন্ট আছে বাকি জমি রয়েছে বাকিটুকু জোর পূর্বক দখল করে আসছে এবং আমাকে প্রাণ নাশের চেষ্ঠা চালাচ্ছে রক্তের হুলি খেলায় মেতে ওঠছে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইজ বুকে অপ প্রচারে লিপ্ত রয়েছে ।
এ বিষয়ে চক্রধা ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বেনুজির আহমেদ জানান, আমি একাধিবার শালিশি দরবার করেও ব্যর্থ হই এবং অনেক দিন হয়ে গেছে ষ্টেম্পের কথা আমার স্বরণে নেই তবে আমি ষ্টেম্পটি খোঁজে দেখব । তাছাড়া যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে তা অত্যন্ত দু:খজনক । এই দরবারে ছাত্রলীগের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন ।
এ ব্যাপারে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী রবিউল্লাহ।